জেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট: ঋতু পরিক্রমায় বাংলাদেশে আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল। তবে, শ্রাবণের ১৭ তারিখেও বৃষ্টির দেখা নেই বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায়।
বৃষ্টি ও মৌসুমি পানি না থাকায় শুকিয়ে গেছে বেশিরভাগ বীজতলা। ফলে আমন ধান চাষের জন্য বীজ বুনতে পারছেন চাষিরা।
অন্যান্য বছর এই সময়ে আমন ধানের চারায় সবুজাভাব থাকে উপজেলার মাঠের বীজতলায়। কিন্তু এবার সাউথখালী, ধানসাগর, রায়েন্দা, খোন্তাকাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায় পানির অভাবে বীজতলা শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। স্লুইজ গেটের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না কৃষকরা। এই অবস্থায় চরম দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।
উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের চাষী হারুন হাওলাদার বলেন, বৃষ্টি না হওয়াতে আমনের বীজতলা শুকিয়ে গেছে। অনেকে এখনো বীজতলা তৈরিই করতে পারেনি। আমাদের এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একটি স্লুইজগেট দিয়ে পানি ঢোকার সুযোগ থাকলেও, পর্যাপ্ত পানি আসছে না। ফলে এখন আমন চাষ করতে পারব কিনা তাই নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি।
রায়েন্দা এলাকার চাষী এনামুল শেখ বলেন, লবন চাষের উপরে আমাদের জীবিকা চলে। কিন্তু চাষই যদি করতে না পারি তাহলে চলব কীভাবে?
রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমল হোসেন মুক্তা বলেন, অনাবৃষ্টিতে কৃষকদের তৈরি বীজতলাও শুকিয়ে গেছে। অনেকে আবার বীজতলা তৈরিই করতে পারেনি।
সাউথকালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক বলেন, চলতি বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় ইউনিয়নের কৃষকদের চাষাবাদে অসুবিধা হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে, বা পানির বিকল্প ব্যবস্থা করতে না পারলে কৃষকদের না খেয়ে থাকতে হবে।
শরণখোলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, উপকূলীয় উপজেলা হওয়ায় মাটিতে লবনাক্ততা অনেক বেশি। উপজেলার কৃষকদের নিজস্ব কোন সেচ ব্যবস্থা নেই। তাই বৃষ্টির উপর নির্ভর করা ছাড়া তাদের তেমন বিকল্প পানির ব্যবস্থা নেই। এবছর মৌসুমি বৃষ্টি কম হওয়ায়, কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। তবে অনাবৃষ্টির বিষয়টি মাথায় রেখে কৃষকদের রবিশস্য সরিষা অথবা স্বল্প জীবনকালের ধান চাষের পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।
শরণখোলা উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ৯ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়ে থাকে। প্রায় দশ হাজার কৃষক এই চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত।